Tuesday, August 12, 2025

স্বপ্না দত্ত, আমার মা: চতুর্থ অধ্যায়, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

ঘাটকাজ কোনও ব্যক্তির শ্রাদ্ধকাজ বা তাঁর প্রতি শ্রদ্ধানিবেদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সাধারণত, আদ্যশ্রাদ্ধ (ব্যক্তির মৃত্যুর পর অশৌচান্তে প্রথমবার শ্রাদ্ধ) করার ঠিক পূর্বে ঘাটকাজ করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে শ্রাদ্ধের আগের দিন, আর কিছু ক্ষেত্রে শ্রাদ্ধের দিনই খুব ভোরে এই কাজ করা হয়। তবে যেই হেতু শ্রাদ্ধের দিনে খুব ব্যস্ততা থাকে তাই শ্রাদ্ধের আগের দিনই ঘাটকাজ করা অধিক প্রচলিত এবং শাস্ত্রসম্মত। ঘাটকাজ আদ্যশ্রাদ্ধের প্রথম অংশ এবং এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই আদ্যশ্রাদ্ধের সূচনা হয়।

আমার মায়ের জন্য ঘাটকাজ গত বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫ (২১ শ্রাবণ ১৪৩২) সম্পন্ন হয়েছে।

সম্পূর্ণ দৈর্ঘ্যের একটি ছবিতে একজন মহিলা, যিনি একটি হলুদ ও সবুজ শাড়ির উপর একটি লাল সোয়েটার এবং একটি সবুজ স্কার্ফ পরে আছেন। তিনি সামনের দিকে দাঁড়িয়ে, ক্যামেরার দিকে মুখ করে হালকা হাসছেন। তাঁর পিছনে একটি বড়, কারুকার্যময়, সোনালী রঙের গেট রয়েছে যার উপরে "SRI SRI MATRI MANDIR" লেখা আছে। খোলা গেট দিয়ে একটি গোলাপি রঙের বাড়ি ও একটি বড় গাছ সহ একটি উঠোন দেখা যাচ্ছে। গেটের ডান দিকে একটি লাল রঙের সাইনবোর্ড ঝুলছে।
আমার মা — জয়রামবাটীতে মাতৃমন্দিরের সামনে।
১৩ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে তোলা ছবি। 
১৮৫৩ সালে এই জয়রামবাটী গ্রামে রামকৃষ্ণদেবের সহধর্মিণী সারদা মায়ের জন্ম হয়েছিল।

ঘাটকাজ — নাম ও স্থান

নদী বা পুকুরের ঘাটে করা হয় বলে এই প্রক্রিয়ার নাম ঘাটকাজ। 

মানুষের সভ্যতা নদীমাতৃক। হাজার হাজার বছর ধরে নদীকে ঘিরে — নদীর তীরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য জনপদ। কখনও গঙ্গা, কখনও কাবেরী, তিতাস — মহানন্দা — গাঙুড়। কখনও মিসিসিপি, টাইগ্রিস–ইউফ্রেটিস, হলুদ নদী হোয়াং হো, বা প্রশস্ত ভোলগা। মানুষ নিজের ব্যক্তিগত, সামষ্টিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনকে মিলিয়ে দিয়েছে নদীর প্রবাহের সাথে।

নদীর সাথে মানুষের এই একাত্মতা এবং নিবিড় সম্পর্কের কারণে কোনও অঞ্চলের প্রধান নদীর তীরেই ঘাটকাজ করা বিধেয়। নদীর অভাবে পুকুর, দিঘী, বা কোনও বড় এবং পরিষ্কার জলাশয়ের পাড়ে ঘাটকাজ করা যেতে পারে। 

ঘাটকাজকে আরও কয়েকটি নামে অভিহিত করা হয়—

  1. ঘাটশ্রাদ্ধ: নদী বা পুকুরঘাটে এই শ্রাদ্ধ করা হয় বলে এই অনুষ্ঠানকে ঘাটশ্রাদ্ধ বলা হয়।
  2. ঘাটপিণ্ডদান: পিণ্ডদানের মূল স্থান ঘাট হওয়ায় একে ঘাটপিণ্ডদান বলা হয়।
  3. পূরক পিণ্ডদান: পূরক পিণ্ড অর্থ যে পিণ্ডদান করা হয় সেইটা মৃত ব্যক্তির আহার হিসাবে নয়, বরং মৃত ব্যক্তির পারলৌকিক দেহ গঠনের উদ্দেশ্যে। 
  4. জলশ্রাদ্ধ: জলের সংস্পর্শে শ্রাদ্ধকার্য সম্পন্ন হওয়ার কারণে একে জলশ্রাদ্ধও বলা হয়।
  5. তর্পণ–সহ শ্রাদ্ধ: ঘাটে পিণ্ডদানের পাশাপাশি তিলতর্পণও করা হয়। পুরোহিতেরা একে তর্পণ–সহ শ্রাদ্ধ বলে থাকেন।
  6. অশৌচমোচন শ্রাদ্ধ: ঘাটকাজের মাধ্যমেই অশৌচকাল সমাপ্ত হয় বলে একে অশৌচমোচন শ্রাদ্ধ বলা হয়। যদিও এইখানে স্পষ্টতই আচরণের বিভিন্নতা রয়েছে। অনেকে ঘাটকাজের দিনকেই অশৌচমোচন হিসাবে চিহ্নিত করেন। আবার অনেকে পরের দিন অর্থাৎ শ্রাদ্ধের দিন বা শ্রাদ্ধের এক বা দুই দিন পরে নিয়মভঙ্গের দিন অবধি অশৌচ এবং নিয়ম পালন করেন।
বিবেকনগর ঝিলের উত্তরদিকের ঘাটের একটি দৃশ্য, যেখানে জল স্থির এবং আকাশের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। ঝিলের পাড়ের ডান দিকে একটি আচ্ছাদিত কাঠামো এবং একটি নীল রঙের জলাধার দেখা যাচ্ছে। ঝিলের পাড়ে গাছপালা এবং দূরে কিছু আবাসিক ভবন দৃশ্যমান। আবহাওয়া মেঘমুক্ত, কিন্তু আকাশ কিছুটা ধূসর।
বিবেকনগর ঝিলের উত্তরদিকের ঘাট থেকে তোলা ছবি।
এই ঘাটেই মায়ের ঘাটশ্রাদ্ধ হয়।

পূরক পিণ্ড

ঘাটকাজের দিন পূরক পিণ্ডদান করা হয়। মৃত ব্যক্তির পঞ্চভূতনির্মিত দেহ সৎকার বা দাহের মাধ্যমে প্রকৃতির সাথে মিশে গিয়েছিল। এখন ব্যক্তির মৃত্যুপরবর্তী সুদীর্ঘ যাত্রার জন্য সূক্ষ্ম দেহ নির্মাণ উদ্দেশ্যে পিণ্ডদান করা হয়। 

ব্যক্তির মৃত্যুর পর অশৌচকালের প্রথম দশদিনে যে পিণ্ড অর্পণ করা সেই দশটি হলো পূরক পিণ্ড। ঘাটকাজের দিন এই দশদিনের পিণ্ড পুনর্নির্মাণ করে উৎসর্গ করা হয়। 

ঘাটকাজের দিন সাধারণত এগারোটি পিণ্ড উৎসর্গ করা হয়। দশটি পিণ্ড মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে, আর একটি যমের বাহন কাকের উদ্দেশ্যে, যে মৃত্যুর পরবর্তী যাত্রায় সহযাত্রী ও সহায়ক হয়। এই দশটি পিণ্ড দিয়ে ব্যক্তির সূক্ষ্মদেহের ভিন্ন অংশ নির্মিত হয়।

  1. প্রথম পিণ্ড: মাথা
  2. দ্বিতীয় পিণ্ড: কাঁধ ও হাত
  3. তৃতীয় পিণ্ড: বুক ও গলা
  4. চতুর্থ পিণ্ড: পিঠ
  5. পঞ্চম পিণ্ড: নাভি ও পেট
  6. ষষ্ঠ পিণ্ড: কোমর
  7. সপ্তম পিণ্ড: নিতম্ব ও জননতন্ত্র
  8. অষ্টম পিণ্ড: উরু
  9. নবম পিণ্ড: হাঁটু
  10. দশম পিণ্ড: পা

এইখানে আপনি জিজ্ঞেস করতে পারেন, সূক্ষ্মদেহের বিভিন্ন অংশ নির্মাণ তো হলো। কিন্তু, মন, বুদ্ধি ইত্যাদি কীভাবে নির্মিত হয়? তার জন্য পিণ্ড কোথায়? এই প্রশ্নের উত্তর হলো এইগুলো নির্মাণের প্রয়োজন হয় না, কেননা এইগুলো ধ্বংসই হয় না। 

চতুর্থ অধ্যায়ে শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার শ্লোক উদ্ধৃত করেছিলাম যেইখানে শ্রীকৃষ্ণ স্পষ্টভাবে আত্মার অমরত্বের কথা জানিয়েছেন। সনাতন ধর্মের অন্যান্য সকল গ্রন্থে এবং সূত্রেও আত্মা অবিনশ্বররূপে বিবেচিত হয়। 

আমার মায়ের শ্রাদ্ধের ৩–৪ দিন আগে মায়ের এক কাকা শ্রী স্বপন কুমার ভট্টাচার্য্যের সাথে কথা বলছিলাম। স্বপন কুমার ভট্টাচার্য্য একজন অত্যন্ত বিদ্বান ব্যক্তি। তিনি এই বিষয় সম্পর্কে সনাতনী অভিমত সেইদিন আমাকে বেশ সুন্দরভাবে বুঝিয়েছিলেন। মানুষের মৃত্যু হলে তাঁর শরীরের মৃত্যু হয়। দাহ বা সৎকারের মাধ্যমের তাঁর পঞ্চভূতের শরীর পঞ্চভূতেই বিলীন করে দেওয়া হয়। কিন্তু অবিনশ্বর আত্মা মৃত্যুর সাথে সাথেই শরীর ছেড়ে যায়। আর আত্মার সাথেই শরীর ছেড়ে যায় মানুষের বুদ্ধি, চিত্ত, অহং। যেই হেতু আত্মা ইত্যাদি এইগুলির মৃত্যুই হয় না, তাই পুনর্নির্মাণ অনাবশ্যক। পূরক পিণ্ডদানের মাধ্যমে শুধু ব্যক্তির সূক্ষ্ম দেহই গঠন প্রয়োজন হয়।

ঘাটকাজ — ৭ অগাস্ট ২০২৫ 

আমার মা স্বপ্না দত্তের দৈহিক মৃত্যু হয় রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫ (১০ শ্রাবণ ১৪৩২)। আমার মায়ের জন্য ঘাটকাজ আয়োজিত হয় বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫ (২১ শ্রাবণ ১৪৩২)। স্থান বিবেকনগর ঝিল, যাদবপুর, কলকাতা। 

পুরোহিত শ্রী পাপন চক্রবর্তীর তত্ত্বাবধানে এই ঘাটশ্রাদ্ধ কাজ হয়। পুরোহিতমশাই বিবেকনগর কালীমন্দিরের একজন পুরোহিত, যেই মন্দিরে ঘাটকাজের পরের দিন মায়ের আত্মার শান্তি কামনায় শ্রাদ্ধকাজ করি। এই ঘাটকাজের সময় আমার সাথে আমার মামা শ্রী শুভব্রত ভট্টাচার্য্য উপস্থিত ছিলেন। 

সকাল আটটা চল্লিশ নাগাদ বিবেকনগর ঝিলের উত্তরদিকের ঘাটে কাজ আরম্ভ হয়। আকাশ মেঘমুক্ত এবং আবহাওয়া নাতিশীতোষ্ণ ছিল।

আসনশুদ্ধি

প্রথমে আসনশুদ্ধি। আসনশুদ্ধি মানে হলো যেই স্থানে বসে কাজটি করা হবে, সেই স্থানটিকে শুদ্ধ করা। পারলৌকিক কাজ বা ধর্মীয় কাজ করার সময় স্থান ও পরিবেশের শুদ্ধতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পুরোহিত মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে আসন বা কাজের স্থানটি শুদ্ধ অথবা পবিত্র করেন। এইক্ষণে সংকল্প নেওয়া হয় যে আমাদের কাজটি একটি পবিত্র উদ্দেশ্য নিয়ে করা হচ্ছে এবং এখানে কোনো বাহ্যিক বাধা গ্রহণযোগ্য নয়।

প্রায়শ্চিত্ত

আসনশুদ্ধির পরের ধাপ প্রায়শ্চিত্ত। প্রায়শ্চিত্তের মূল উদ্দেশ্য হলো অশৌচকালের সময়ে নিজের বা পরিবারের সদস্যদের দ্বারা যদি ভুল বা ত্রুটি হয়ে থাকে, বা আন্তরিকতা এবং একাগ্রতার অভাব থেকে থাকে, তার জন্য অনুশোচনা করা এবং ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।

যদিও ঈশ্বরচর্চা বা আস্তিকতা–নাস্তিকতা এই অধ্যায়ের বা পরিচ্ছেদের বিষয় নয়, তবু একটা কথা বলি। যতদূর বোধ হয় এই ভুল–ত্রুটির জন্য ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা প্রার্থনার মূল বিষয় হলো একজন ব্যক্তির নিজের মনের — নিজের অন্তরাত্মার কাছেই ক্ষমা প্রার্থনা বা অনুশোচনা করা। ধর্মের দিক থেকে দেখলেও ধর্ম শেখায় ঈশ্বর মানুষের হৃদয়েই অধিষ্ঠান করেন। সেই ক্ষেত্রে, প্রায়শ্চিত্তের আরেক অর্থ হয় নিজেরই মনের কাছে অনুশোচনা প্রকাশ আর একই ভুল–ত্রুটি যেন ভবিষ্যতে না হয়, সেই বিষয়ে সর্বজ্ঞ ঈশ্বরকে সাক্ষী করে সংকল্পগ্রহণ। 

পুরোহিতমশাইয়ের নির্দেশ অনুযায়ী মন্ত্রপাঠের মাধ্যমে প্রায়শ্চিত্ত সংকল্প হয়।

বিবেকনগর ঝিলের ঘাটে ঘাটকাজের একটি মুহূর্তের ছবি। ছবিতে দু'জন পুরুষকে মেঝেতে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। পুরোহিত শ্রী পাপন, যিনি লাল পোশাকে আছেন, তিনি একটি কলার পাতার উপর পিণ্ড তৈরির উপকরণগুলো নিয়ে কাজ করছেন। তার পাশে সাদা কাপড় পরে আছেন টিটো দত্ত, যিনি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আছেন। তাদের পিছনে একটি সিমেন্টের বেঞ্চ এবং একটি দেওয়াল দেখা যাচ্ছে।
ঘাটকাজের সময় পিণ্ড তৈরির কাজ চলছে।

পিণ্ডদানপর্ব

এরপর শ্রী বিষ্ণুকে স্মরণ করে পিণ্ডদানের কাজ আরম্ভ হয়। এইটিই ঘাটশ্রাদ্ধের প্রধান অংশ। আতপ চাল, তিল, কলা, এবং মিষ্টি (সন্দেশ) দিয়ে ১১টি ছোট ছোট গোলাকার পিণ্ড তৈরি করি। অনেকে ঘি, মধু, কিছু কিছু প্রথা অনুযায়ী, আতপ চালের পাশাপাশি যবের আটাও পিণ্ড তৈরিতে ব্যবহার করেন। তবে আমরা আমার মায়ের ঘাটশ্রাদ্ধে এইসকল সামগ্রী ব্যবহার করিনি।

ॐ বিষ্ণু, ॐ বিষ্ণু, ॐ বিষ্ণু। (অথবা নমোঃ বিষ্ণু, নমোঃ বিষ্ণু, নমোঃ বিষ্ণু)।

ॐ। অদ্য কৃষ্ণপক্ষে, শ্রাবণমাসস্য একবিংশতিতমে দিনে, বৃহস্পত্যহ্নে, অহং বিষ্ণোঃ চরণযোঃ স্থিত্বা, মম গোত্রং শাণ্ডিল্যম্ ইতি, মম নাম টিটো দত্ত ইতি উচ্চারয়ামি। শাণ্ডিল্যগোত্রজা মাতা স্বপ্না দত্তায়াঃ প্রেতত্বমোক্ষার্থং তস্যাঃ শ্রাদ্ধনিমিত্তং চ, বিবেকনগরঝিলতটে তস্যাঃ পিতৃলোকপ্রাপ্তয়ে অস্য শ্রাদ্ধকর্মাঙ্গভূতং ঘাটকার্যং অহং সম্পাদয়ামি।

[অনুবাদ: ॐ। আজ কৃষ্ণপক্ষের শ্রাবণ মাসের একবিংশ তিথিতে, বৃহস্পতিবারে, আমি বিষ্ণুর চরণে আশ্রয় গ্রহণ করছি — আমার গোত্র শাণ্ডিল্য, আমার নাম টিটো দত্ত। শাণ্ডিল্য গোত্রীয়া আমার মাতা স্বপ্না দত্তের প্রেতত্ব মোক্ষের জন্য এবং তাঁর শ্রাদ্ধ উপলক্ষ্যে, বিবেকনগর ঝিলতটে তাঁর পিতৃলোকপ্রাপ্তির উদ্দেশ্যে, এই শ্রাদ্ধকর্মের অন্তর্ভুক্ত ঘাটকার্য আমি সম্পাদন করছি।]

এইরূপ অবস্থান উচ্চারণ করে ঘাটকাজের পিণ্ডদান পর্ব দান শুরু হয়। বিভিন্ন মন্ত্রের সাথে সূর্যপ্রণাম মন্ত্র এবং গায়ত্রী মন্ত্রও উচ্চারিত হয়। সর্বমোট ১১টি পিণ্ডদান করি। 

  1. ॐ শাণ্ডিল্যগোত্রস্য মাতুঃ স্বপ্না দত্তায়াঃ এষ তে মস্তকরূপঃ পিণ্ডঃ স্বাহা। (অনুবাদ: ॐ। আমার মা, স্বপ্না দত্ত, শাণ্ডিল্য গোত্রের, এই পিণ্ডটি তাঁর পারলৌকিক শরীরের মস্তক নির্মাণে উৎসর্গ করা হলো।)
  2. ॐ শাণ্ডিল্যগোত্রস্য মাতুঃ স্বপ্না দত্তায়াঃ এষ তে স্কন্ধবাহুরূপঃ পিণ্ডঃ স্বাহা। (অনুবাদ: ॐ। আমার মা, স্বপ্না দত্ত, শাণ্ডিল্য গোত্রের, এই পিণ্ডটি তাঁর কাঁধ ও বাহুর অঙ্গ নির্মাণে উৎসর্গ করা হলো।)
  3. ॐ শাণ্ডিল্যগোত্রস্য মাতুঃ স্বপ্না দত্তায়াঃ এষ তে বক্ষঃকণ্ঠরূপঃ পিণ্ডঃ স্বাহা। (অনুবাদ: ॐ। আমার মা, স্বপ্না দত্ত, শাণ্ডিল্য গোত্রের, এই পিণ্ডটি তাঁর বক্ষ ও কণ্ঠের অঙ্গ নির্মাণে উৎসর্গ করা হলো।)
এইভাবে বেশ কিছু মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে দশটি পিণ্ডদান করি। এগারোতম পিণ্ডটি কাকের উদ্দেশ্যে ছিল। 
ॐ যমায় নমঃ। ॐ কাকায় নমঃ। এষ পিণ্ডঃ কাকায় স্বাহা। (অনুবাদ: ॐ। যমকে প্রণাম। কাককে প্রণাম। এই পিণ্ডটি কাকের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হলো।)

ঘাটকাজ — শেষ অংশ

পিণ্ডদানের পর বিষ্ণু, শিব, এবং যমকে প্রণাম করে এইদিনের ঘাটকাজ শেষ করি। 

ঘাটশ্রাদ্ধের এই পুরো কাজ করতে প্রায় ৫০ মিনিট মতো সময় লেগেছিল। এরপর, আমাদের পাড়ার একটা সেলুনে ক্ষৌরকার্য হয়। সেলুনের নাপিতকে আগে থেকেই জানানো ছিল। সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ এইদিনের কাজ সম্পূর্ণ হয়।

চতুর্থ অধ্যায়, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ — ঘাটকাজপর্ব — এইখানেই শেষ করলাম।

চরৈবেতি।

স্বপ্না দত্ত, আমার মা (Swapna Dutta, my Mother)


This page was last updated on: 12 August 2025
Number of revisions on this page: 2
Internet Archive Backup: See here

No comments:

Post a Comment

Please post your comment in this section. Keep it friendly and constructive by following our Comment Policy.
We kindly request you to use your Google account or provide your Name and Website URL when commenting. Please use anonymous comments only if necessary.